সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন
১৬ ই ডিসেম্বরে ২৬ শে মার্চে ও ২১ শে ফেব্রুয়ারি এই দিনগুলোকে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন সহ রাজনৈতিক দলের নেতারা অবহেলার চোখে দেখে।
মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কালের খবর : বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্বের দেশ। ২০২২ সালের গণনা অনুযায়ী এ দেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের বসবাস, এই মানুষের মধ্যে রয়েছে মুসলমান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ও বিভিন্ন জাতির মানুষ। গণতন্ত্রের অধিকার অনুসারে এই মানুষগুলো বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কেউ ডাক্তার কেউ কবিরাজ কেউ ইঞ্জিনিয়ার কেউ সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করে কেউ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে কেউ আবার বিভিন্ন রাজনীতি দলের মধ্যে সঙ্ঘবদ্ধ। এগুলো কে নিয়েই আমার একটি স্বাধীন দেশে বসবাস করি।
১৬ ডিসেম্বর, রক্তস্নাত বিজয় দিবস। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মাথা উচু করার দিন। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করে বহু প্রাণ আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এদিনে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়ের লাল সূর্য।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের পর এদিন আত্মসমর্পণ করে মুক্তিকামী মানুষের কাছে। আর পাকিস্তানি বাহিনীর এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে দীর্ঘ দুই যুগের পাকিস্তানি শোষণ আর বঞ্চনার। নির্যাতন, নিষ্পেষণের কবল থেকে মুক্ত হয় বাঙালি জাতি।
যেখানে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদের বিজয় অর্জন করেছে, সেই পবিত্র দিনে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা যদি বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য যায় তাহলে তারা মনে করে না যে আজ বাংলাদেশের বিজয় দিবস। যেখানে তারা বাৎসরিক সাধারণ হিসাব করলে একজন সরকারি কর্মকর্তা ও বেসরকারি কর্মকর্তা ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত পায়, অথচ সেখানে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার একটা শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য একজন সাংবাদিকে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে কেন এই দিনগুলির প্রতি তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলেন মহেশরৌ হালি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন।
২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করা হয় দিনটি। আর এই শ্রদ্ধা ভক্তির দিনটিকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের কাছে সাংবাদিকরা শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য গেলে তারা সাংবাদিকদের দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে, আজ না কাল কালনা পরশু এভাবেই তারা সাংবাদিকদের সাথে অমানুষিক ব্যবহার করে আসছে দিনের পর দিন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।
এই দিনটিতে শহীদদের স্মরণীয় করে রাখার জন্য,শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য, শহীদদের স্মরণে শুভেচ্ছা বিনিময় চাইতে গেলে তাড়াশ উপজেলায় নওগাঁ ইউনিয়নের মহেশরৌ হালি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গেলে হেডমাস্টার সহ শিক্ষকবৃন্দরা বলে আমাদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের দরকার নাই। নওগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি বলেন নওগাঁ ইউনিয়নে আমার চেয়ে বড় বড় নেতা কর্মী আছে তাদের কাছে শুভেচ্ছা নাও, তাড়াশ উপজেলায় নওগাঁ ইউনিয়নে মহেশরৌ হালী গ্রামের মহেশরৌ হালী জলিল নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের হেডমাস্টারের কাছে গেলে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় দিতে নারাজ হন। কেন এই বিশেষ দিনগুলির প্রতি তারা এত অবহেলার করে চলেছে, তাদের কাছে কি এই দিনগুলোর কোন মূল্য নেই, যে দিন গুলির কারণে তারা বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করেছে কেন তারা এই দিনগুলির প্রতিদান দিচ্ছে না, কেন তারা এই দিনগুলোকে বছরের পর বছর দিনের পর দিন অবজ্ঞা করে চলেছে, কেন তারাই দিনগুলিকে মনে রাখতে চায় না, বলেন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ মুন্না হোসাইন। তিনি আরোও বলেন ১৬ই ডিসেম্বর ২৬ শে মার্চ ২১শে ফেব্রুয়ারি এই দিনগুলোতে সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছা বিনিময়ে ও বিজ্ঞাপন বাধ্যতামূলক করা হোক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হোক।